Headlines
Loading...
এ কে এম আব্দুল্লাহ’র প্রবন্ধ: আবেগের সাথে বিবেকবান নেতৃত্ব চাই

এ কে এম আব্দুল্লাহ’র প্রবন্ধ: আবেগের সাথে বিবেকবান নেতৃত্ব চাই

 




          প্রবন্ধ: আবেগের সাথে বিবেকবান নেতৃত্ব চাই

                          এ কে এম আব্দুল্লাহ


পৃথিবীর বাইরে যে সকল সম্পদ আছে, বিশেষ করে ‘চাঁদে’ যাতে একক কোনো দেশের মালিকানা না হয় ; সেজন্য কয়েকটি দেশ মিলে একটি চুক্তি করেছিল অনেক পূর্বে। কিন্তু প্রযুক্তির এই অভাবনিয় এবং দ্রুত উন্নয়নের কারণে দেশগুলোর প্রতিনিধি  চুক্তির প্রতি তীক্ষ্ন দৃষ্টি রাখছে।ফাঁকফোকর খুঁজছে কীভাবে নিজের ভাগে বেশি করে নিতে পারে।কীভাবে সেখানে নিজস্ব রাজনৈতিক,বাণিজ্যিক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। আর আমরা আজও ডেঙ্গু মোকাবেলায় উডেন ফ্লোর ঝাড়ু দিচ্ছি।পুণ্য লাভের আশায় গণপিটুনি দিয়ে মানুষ মারছি।কতটুকু অসভ্য হলে এধরনের কাজ করা সম্ভব বলা মুশকিল। পারিবারিক কিংবা সামাজিকভাবে মূল্যবোধের অভাব এবং সেই সাথে অশিক্ষা,কুশিক্ষা, দরিদ্রতা আমাদেরকে যেভাবে গিলে খাচ্ছে এবং যেভাবে নৈতিক অধপতন হচ্ছে, তা থেকে বের হবার কোনও আলামত এই মুহুর্তে নেই । 


একটি দেশকে উন্নয়নের শিখরে পৌঁছাতে শুধু কোনো সরকারই যথেষ্ঠ নয়। সরকারের যেমন দায়িত্ব তেমনি নাগরিকেরও দায়িত্ব রয়েছে।আমাদের বেলায় সরকারের দায়িত্বশীলরা যেভাবে ব্যার্থ, নাগরিক হিসেবে আমরাও দায়িত্ব পালনে ব্যার্থ। আমরা টংদোকানের বেঞ্চে বসে চা গিলতে গিলতে অ্যামেরিকার প্রেসিডন্টকে গালি দিই।সালমান রুশদির তেরোজনম চর্চা করি।আ্যাপেল গাছ কিংবা অশ্বত্থ গাছ, প্রিয়া সাহা,নোবেল কিছুই বাদ যায় না। এখানে বসে বসেও পৃথিবীর যেকোনো দেশের সরকারের সমালোচনা করি কিংবা কীভাবে দেশ পরিচালনা করতে হয় আকিজ বিড়ি টানতে টানতে জ্ঞান দিই। অথচ একহাত দুরে কাঁঠালের ভুতি, আম,তরমুজের বাকল,কলার খোসা ছড়ানোর।পরিত্যক্ত বাল্টি, বোতল, ভাঙা কৌটা নর্দমায় জমা পানিতে মশা, মাছি বংশ বিস্তার করছে কোনো খেয়াল নেই।গোয়েন্দার মতো কার মেয়ে কার ছেলের সাথে পালিয়েছে তা চিবিয়ে চিবিয়ে বিকৃত মজা নিতে ব্যাস্ত।বাসে ট্রেনে কোনো মেয়েকে বিকৃত স্পর্শে যেন অদ্ভুত আনন্দ মেলে। ধর্ষনের বিকৃত যৌন খেলা শেষে ভিডিয়ো ফুটেজ জু’ম করে চোখের স্বাদ মিটাই। 


পৃথিবী এখন যে সময়ের ভেতরে প্রবেশ করছে, আমরা যদি অন্তত একটি প্রজন্মকে সেই সময়ের মোকাবেলায় মান,গুন এবং দক্ষতায় প্রস্তুত করে যেতে না পারি, তাহলে একদিন আমরা হারিয়ে যাবো।সে দিকে আমাদের কোনো খেয়াল নেই।আমরা ব্যাস্ত আছি সাদা পাঞ্জাবি পরে নেতা হতে।যোগ্যতা থাকুক বা না থাকুক।আজকাল যেন সাদা পাঞ্জাবি পরে আবুল তাবুল বলা কিংবা অপ্রয়োজনিয় কর্ম করা নেতা হবার মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও আসুন, অনেক দেরীতে হলেও সাদা পাঞ্জাবি পরা লোকদেখানো নির্লজ্জ ঝাড়ুদারদের পাশে বিভৎস ফটো তুলে নেতা হবার চেয়ে একটি মাস্ক কাউকে দিয়ে ফটো সেশন করে নেতা না হয়ে,একটি শ্রেষ্ট প্রজন্ম তৈরিতে মনোযোগ দিই। মানবিক গুণাবলী, আবেগ এবং বিবেক সম্পন্ন নেতৃত্ব গড়ে তুলতে, আমাদের নতুন প্রজন্মকে একটি বিজ্ঞান নির্ভর সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলি।তা না হলে প্রযুক্তি নির্ভর পৃথিবীতে আমাদের অস্থিত্ব ঠিকিয়ে রাখা কতটুকু কঠিন হবে, তা কেবল আগামি সময়-ই বলে দেবে। 

০৩/০৮/২০১৯

0 Comments: